
দ্যা ডেইলি নিউজ / ID/23 05 2020/TDNB/0034 6:58:08 PM
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন বিনোদপুরে “প্রদীপ” নামের একটি অরাজনৈতিক, সামাজিক সেবামূলক, ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনাভাইরাসে মানুষ যখন অসহায়, নিরুপায় ও ঘরবন্দী, কর্মহীন হয়ে পড়া ১০০০ পরিবারের মাঝে ভিন্নধর্মী ঈদ-সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
![]() |
এবার ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার উদ্দেশ্যে তারা শনিবার বিনোদপুরের ১০০০ পরিবারগুলো কে উপহার হিসেবে ভিন্নধর্মী ঈদ-সামগ্রী হিসাবে ১ কেজি পোলাও চাল, ১ টি মুরগী, ১ কেজি চিনি, সেমাই, পাঁপড়, গুড়ো দুধ ও ১ লিটার তেল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন।
![]() |
এর আগে, অত্র ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের ১০৫০ টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী প্রদীপের স্বেচ্ছাসেবীরা রোদ–বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিজস্ব বাহনে পৌঁছে দেন। প্রতিজনের জন্য ১৭ কেজি পরিমাণের একটি প্যাকেটের তালিকায় ছিল– ৮ কেজি চাল, ২ কেজি আটা, ২ কেজি আলু, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার সয়াবিন তেল ও একটি জীবাণুনাশক সাবান।
তাছাড়া, অত্র অঞ্চলের চিকিৎসাবঞ্চিতদের স্বার্থে ‘প্রদীপ’ খুব শীঘ্রই চালু করতে যাচ্ছে টেলিমেডিসিন সেবা। যেখানে ১০ জন ডাক্তারের সমন্বয়ে গড়া একটি মেডিকেল টিম চিকিৎসা দিবেন ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
প্রদীপ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির মূল বৈশিষ্ট হল – তারা খুঁজে খুঁজে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়। সংগঠনটির উদ্যোক্তারা দাতা বা গ্রহীতার ছবি প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এমনকি সংগঠনের সাথে যারা কাজ করছে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করতে চাইনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনোদপুর ইউনিয়নের কিছু কৃতি সন্তান এটির উদ্দ্যোক্তা হলেও সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
প্রদীপের জন্ম কথা
করোনাভাইরাসে মানুষ যখন অসহায়, নিরুপায় ও ঘরবন্দী, ঠিক তখনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন বিনোদপুরে কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসএসসির ব্যাচের সাবেক ছাত্রদের সমন্বয়ে এ সংগঠন। এখানে পৃষ্ঠপোষক হিসাবে কাজ করছেন সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে চাকুরীরত অনেকে। এখানে কোন কমিটি নেই, নেই কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, নেই কোন ভেদাভেদ।
সবচাইতে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এ সংগঠনের মাধ্যমে যে সমস্ত সেবামুলক কাজ হবে কেবল সেগুলো প্রকাশ করা যাবে। যারা জড়িত থেকে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদের নাম প্রকাশ করা যাবে না। কারণ সংগঠনটি নিজেদের প্রচারের জন্য কিছু করছেন না, শুধু সমাজের অসহায় ও হতদরিদ্রদের সেবা করাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। করোনা থেকে মুক্তিলাভের পরও সেবা ধারাবাহিকতা চলবে বলে সুত্রটি জানায়।
প্রদীপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: প্রদীপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাপক ও সুদূর প্রসারী। প্রদীপের স্বপś হলো প্রথমে বিনোদপুর ইউনিয়নে কোন মানুষ অনাহারে থাকলে বিশেষ ব্যবস্থায় অনাহারী ব্যক্তিদের সংবাদ পাওয়া মাত্রই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে। বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যাবে না। রোগীর দোরগড়ায় চিকিৎসা পৌঁছে যাবে। কেউ অশিক্ষিত থাকবে না। সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। যারা শিক্ষা সম্পর্কে অসচেতন তাদেরকে সচেতন করা হবে। কোন ভিক্ষুক থাকবে না। ভিক্ষাবৃত্তির অবসান ঘটিয়ে ভিক্ষকদের জন্য এই সংগঠনের পক্ষ থেকে পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সকল অনিয়ম ও দূনীর্তির অবসান ঘটিয়ে বিনোদপুরে একটি সুন্দর, স্বচ্ছ ও কর্মময় সমাজ গড়ার প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। তবে কোন মতে সরকার বিরোধী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা যাবে না।